জমির দলিল সহজে বের করুন - ই পর্চা খতিয়ান অনুসন্ধান
badol
২৫ ফেব, ২০২৫
অনলাইনের মাধ্যমে জমির দলিল সহজে বের করুন আপনার হাতে থাকা মোবাইলের
মাধ্যমে। আজকে এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে জানাবো, কিভাবে আপনি আপনার দলিল
অনলাইন থেকে বের করবেন।
আজকে আপনারা জানতে পারবেন, জমির মালিকানা কিভাবে বের করতে হয়, এবং জমির
কাগজপত্র কিভাবে বের করতে হয় সে সম্পর্কে। অনেক সময় জমির দলিল পুড়ে যায়,
কিংবা হারিয়ে যায়। এটা কিভাবে পুনরায় বের করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত
জানতে পারবেন।
অনলাইনের মাধ্যমে জমির দলিল তল্লাশি করা আমাদের বিভিন্ন প্রয়োজনে আসতে পারে।
অনেক সময় আমাদের আসল জমির দলিল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। যেমন আগুনে পুড়ে
যাওয়া, পানিতে নষ্ট হয়ে যাওয়া, এছাড়াও হারিয়ে যেতে পারে। এটি
ছাড়া ও বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে যাতে জমির দলিল অনুসন্ধান কিংবা পুরাতন
দলিল তল্লাশির প্রয়োজন হতে পারে।
এছাড়াও আরো বিভিন্ন কারনে আপনাকে দলিল তল্লাশি করতে হতে পারে। দেখা যাচ্ছে
আপনার দলিল ১০ থেকে ২৫ বছর হয়ে গেছে দাগ নাম্বার বা বিভিন্ন নম্বর
গুলো বুঝে যাচ্ছেনা সেক্ষেত্রে আপনাকে অনলাইনের মাধ্যমে এটি খুজে নিতে
হবে। এজন্য আপনাকে নিকটস্থ সাব রেজিস্টার অফিসে পুরাতন দলিল
তল্লাশি করতে হবে।
আপনারা হয়তো মনে করতে পারেন জমি জায়গা সংক্রান্ত বিষয়গুলো অনেক জটিল। জমি
জায়গা সংক্রান্ত বিষয়গুলো জটিল মনে হওয়ার একটি কারণ রয়েছে সেটি হচ্ছে আমরা এ
সম্পর্কে তেমন জানিনা বা ধারণা নেই। এখন আর ভয় নেই আপনি চাইলেই অনলাইনের
মাধ্যমে জমির দলিল তল্লাশি দিতে পারবেন। এজন্য আপনার হাতে থাকা ডিভাইসটির
মাধ্যমে বিষয়গুলো নিশ্চিত হতে পারবেন। এজন্য পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন।
মৌজা, পর্চা, জেএল নাম্বার, দাগ নাম্বার সম্পর্কে ধারনা
জমির দলিল সহজে বের করুন এবং কিভাবে জমির দলিল তল্লাশি করতে হয় সে বিষয়ে
ভালোভাবে জানুন। তাহলে আপনাকে প্রথমে জানতে হবে
মৌজা, পর্চা, জে এল নাম্বার, দাগ নাম্বার ইত্যাদি সম্পর্কে আপনাকে
ভালোভাবে ধারণা পেতে হবে। তাহলে জমি তল্লাশি করতে আপনাকে কোনো ভয় পেতে হবে
না। এজন্য প্রথমে আপনাকে জানাবো মৌজা কাকে বলে।
মৌজা হচ্ছে ভূমি প্রশাসনিক একক। যা সাধারন গ্রামের অন্তর্ভুক্ত ছোট ছোট
ভূখণ্ডকে বোঝানো হয়। প্রতিটি মজার নির্দিষ্ট একটি নাম ও নাম্বার থাকে এটা ভূমি
ব্যবস্থাপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সরকারি বা বেসরকারিভাবে আপনি
যদি ভূমি লেনদেন করেন সে ক্ষেত্রে মজার গুরুত্ব অপরিহার্য। মৌজাভিত্তিক দাগ
নম্বরের মাধ্যমে নির্দিষ্ট জমি চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।
পর্চা হলো জমির মালিকানা সম্পর্কিত সরকারি নথি যা জমির রেকর্ড ও জরিপ বিভাগ
দ্বারা প্রস্তুত করা হয়। এটি মূলত জমির মালিক কে, জমির পরিমাণ
কত, এবং এটি কোন শ্রেণীর ভূমি এর সমস্ত তথ্যগুলো সংরক্ষণ থাকে।
জেএল নাম্বার হল একটি মৌজার নির্দিষ্ট পরিচিতি সংখ্যা, ভূমি রেকর্ড ও জমি
বিভাগের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়ে থাকে। ভূমি প্রশাসনের জমির রেকর্ডের
তথ্যগুলো সংরক্ষণের জন্য বেস গুরুত্বপূর্ণ।
দাগ নাম্বার হলো নির্দিষ্ট মৌজার মধ্যে প্রতিটি জমির পৃথকভাবে শনাক্তকারীর
নাম্বারকে দাগ নাম্বার বলা হয়ে থাকে। এটি ভূমি জরিপের সময় নির্ধারিত হয়ে
থাকে। দাগ নাম্বারের বেশ গুরুত্ব রয়েছে কারণ এটি যদি ভুল হয় তাহলে জমি
সংক্রান্ত দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।
কিভাবে নাম দিয়ে জমির দলিল বের করা যায়
আমি আপনি সহজে নাম দিয়ে জমির দলিল বের করার চেষ্টা করি। এজন্য জমির প্রকৃত
মালিকের নাম প্রয়োজন পড়ে। এরপরও আপনি জমির দলিল বের করতে পারবেন না কারণ
শুধুমাত্র মালিকের নাম যদি আপনি দেন তাহলে জমির তল্লাশি বা জমির দলিল বের করা
সম্ভব নয়। এজন্য আপনাকে কিছু নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। জমির দলিল
তৈরি করতে হলে অবশ্যই একজন দাতা এবং গ্রহিতাকে একসাথে সাব রেজিস্টার এর কাছে
উপস্থাপন হতে হবে।
এরপর সাব রেজিস্টার দাতা ও গ্রহে তাকে প্রশ্ন করার পর লিখিতভাবে দলিলটি যাচাই
বাছাই করে রেজিস্ট্রি করে নিবেন। সাব রেজিস্টার কর্তৃক দলিলটি
রেজিস্ট্রির পর কিছু সময় এরপরে বলামে এন্ট্রি হবে। বালামের যখন দলিল
এন্ট্রি হবে তখন দুটি সূচিপত্র তৈরি করা হয়। একটি সূচিপত্র তৈরি করা হয়
ডাটা ও গ্রহিতা এবং অপরকে মৌজা ভিত্তিক দাগ নাম্বার দিয়ে। আপনি যখন দলিল তল্লাশি
দিবেন তখন সূচিপত্র অনুযায়ী তল্লাশি দিবেন।
এজন্য আপনাকে সংশ্লিষ্ট রেজিস্টার এর কাছে একটি আবেদন পত্র লিখতে হবে। এই
আবেদনের মাধ্যমে আপনি নিজেই দলিল তল্লাশি করতে পারবেন। তবে এ ক্ষেত্রে
আপনাকে একটি সরকারি ফি প্রদান করতে হবে। সরকারি ফ্রি হচ্ছে প্রথম বছর ২০
টাকা এবং পূর্ববর্তী বছরপ্রতি ১৫ টাকা করে খরচ হবে। পুরাতন জমির দলিল
তল্লাশি দিতে আপনাকে কোথাও যেতে হবে না। আপনার হাতে থাকা ডিভাইসটির মাধ্যমে বের
করতে পারবেন।
অনলাইনে জমির দলিল চেক করবেন যেভাবে
বর্তমানে অনলাইনে অনেক রকমের সেবা আপনি ঘরে বসেই পাচ্ছেন। এজন্য আপনারা গুগল
বা ইউটিউব এর মাধ্যমে অনলাইনে জমির দলিল লিখে সার্চ করলে সে সম্পর্কে ধারণা পেয়ে
যাবেন। এছাড়াও সরকারি ই পর্চা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জমির দলিল চেক করতে
পারবেন। এজন্য কিছু নিয়ম দেওয়া হল সেটি ফলো করুন।
ই-পর্চা ওয়েবসাইটঃ
আপনার হাতে থাকা ডিভাইস এর মাধ্যমে যেকোনো সার্চ ইঞ্জিন যেমন ক্রম
ব্রাউজার, ফায়ারফক্স এগুলো ব্রাউজারের মাধ্যমে www.eporcha.gov.bd লিখে
সার্চ করুন এরপর খতিয়ান অনুসন্ধান এর ভিতরে যাবেন।
খতিয়ান অনুসন্ধানঃ
খতিয়ান অনুসন্ধান প্যানেলের ভিতর প্রবেশ করুন। এরপর আপনি 'খতিয়ান
সার্চ' এই অপশনটি নির্বাচন করুন। এরপর আপনি জরিপের ধরন নির্বাচন
করবেন।
জরিপের ধরনঃ
এরপর আপনি আপনার জমির ধরন নির্বাচন
করবেন।যেমন সিএস, এসএ, আরএস, এবং বিএস এগুলো থেকে আপনি
সঠিকটি বেছে নিয়ে নির্বাচন করবেন। এরপরে আপনি অঞ্চল সম্পর্কিত তথ্য
যেগুলো আছে সেগুলো প্রদান করিবেন
অঞ্চল সম্পর্কিত তথ্যঃ
এখানে আপনি অঞ্চল সম্পর্কিত তথ্য দিবেন যেমন বিভাগ, জেলা, উপজেলা বা থানা,
এবং মৌজা নির্বাচন করবেন। এরপরে আপনি খতিয়ান অনুসন্ধানের পদ্ধতি বেছে
নিন।
খতিয়ান অনুসন্ধানঃ
এখন আপনি খতিয়ান নাম্বার, দাগ নাম্বার, মালিকের নাম, বা
পিতা/স্বামীর নামের মাধ্যমে আপনাকে খতিয়ান অনুসন্ধান করতে
হবে। প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করতে হবে।
প্রয়োজনীয় তথ্যঃ
প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান এর ক্ষেত্রে নির্বাচিত অনুসন্ধান পদ্ধতি অনুযায়ী
সঠিক তথ্য ইনপুট করবেন। সার্চ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
সার্চ বাটনঃ
এরপর আপনি সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে দেবেন দেওয়ার পরে স্যার বাটনের উপর ক্লিক
করবেন তাহলে আপনি খতিয়ান বিস্তারিত দেখতে পাবেন।
খতিয়ান তথ্যঃ
আপনার তথ্য দেওয়ার পর যদি সার্চ সফল হয় তাহলে আপনি জমির খতিয়ান বিস্তারিত
তথ্য দেখতে পাবেন।
এরপর আপনি যদি সার্টিফাইড কপি চান, তাহলে ই পর্চা ওয়েবসাইটের
মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরেই
নির্ধারিত যে ফি দেওয়া আছে সে ভি প্রদান করতে হবে
তাহলে ডাকযোগে আপনার উল্লেখিত ঠিকানায় সার্টিফিকেট কপিটি পৌঁছে
দেবে বা পেয়ে যাবেন।
এছাড়াও ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র কিংবা ই সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে সহায়তা
পাবেন সেখানে প্রয়োজনীয় তথ্য ও বিভিন্ন রকমের সেবা প্রদান করা হয়।
সহজে দলিল তল্লাশি নিয়ম জানুন
প্রথমে আপনাকে জানতে হবে আপনার জমির বালাম বই কোথায় আছে।যদি আপনি জানতে
পারবেন উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে। জমির দলের তল্লাশি ও অনুসন্ধান
একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া যা জমির মালিকানা সীমানা এবং অন্যান্য নিশ্চিত
করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যদি আপনার কাছে জমির মূল দলিল থাকে তবে সেটি
সংরক্ষণ করুন এবং প্রয়োজনীয় অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসে প্রদর্শন করুন
তাহলে মূল দলিলের ভিত্তিতে জমির তথ্যগুলো যাচাই করা সহজ হবে।
আপনার যদি দলিল হারিয়ে যায় তাহলে অনলাইনের মাধ্যমে দলিল তল্লাশি খুব সহজে
করতে পারবেন। বর্তমানে বাংলাদেশে অনলাইনে জমির দলিল তল্লাশি এ পর্যায়ে
ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে খুব সহজ হয়েছে। (www.eporcha.gov.bd) এই ওয়েবসাইটের
ভিতরে প্রবেশ করে আপনি জমির খতিয়ান দলিলের অন্যান্য তথ্য দেখতে
পাবেন। এজন্য উপরে বলা হয়েছে যে, এক্ষেত্রে সার্টিফাইড কপি
প্রয়োজন।
সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত যেটি বলা যায়, জমির দলিল তল্লাশি বিষয়টি জটিল
হতে পারে এজন্য আপনি অভিজ্ঞ আইনজীবী বা ভূমি বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের সহায়তা
নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে আমি একান্তভাবে মনে করি। এছাড়াও যদি
অনলাইনে তথ্য না পাওয়া যায় তবে নিকটস্থ ভূমি অফিসে সরাসরি যোগাযোগ করে
আপনার কাঙ্খিত সেবাটি পেতে পারেন।
দলিল নাম্বার দিয়ে জমি তল্লাশি করুন
দলিল নম্বর দিয়ে দলিল বের করতে পারবেন সহজে। এর জন্য আপনাকে নিকটস্থ
সাব রেজিস্টার বা অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করতে হবে। এর জন্য আপনাকে
প্রথমে দলিল নাম্বারটি সংগ্রহ করতে হবে যেটি আপনি পেয়ে থাকেন দলিল নিবন্ধন
সময়। হাফ রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে যে ফ্রি নির্ধারণ করা রয়েছে সে ভিটি
প্রদান করবেন এবং দলিলের সত্যায়িত কপি সংগ্রহ করতে হবে।
দলিল নাম্বারের মাধ্যমে অনুসন্ধান করে রেকর্ড খুঁজে বের করার জন্য অফিসের
ইনডেক্স রেজিস্টার ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে অনলাইনে কিছু সুবিধা চালু
থাকায় ই পর্চা ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করে বিভাগ, জেলা, মৌজা ও দলিল
নাম্বার দিয়ে অনুসন্ধান করতে পারবেন। তবে একটি সমস্যা রয়েছে অনলাইন এর
মাধ্যমে কিছু কিছু এলাকার তথ্য নাও পেতে পারেন। তাই সাব রেজিস্ট্রি অফিসে
যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
তবে দলিলটি যদি আপনার পুরনো হয় তাহলে ভূমি অফিসে গিয়ে পুরাতন
রেকর্ড বের করতে হবে। এছাড়া জমির মালিকানার সততা যাচাই করতে সংশ্লিষ্ট
ভূমি অফিস থেকে অতিরিক্ত কপি সংগ্রহ করুন। তবে যদি দলিল সংক্রান্ত কোন
জটিলতা থাকে তাহলে আপনি বিশ্বস্ত আইনজীবীর সাথে যোগাযোগ করে তার কাছ থেকে উক্ত
সেবাটি নিতে পারেন। এবং এটি একটি উত্তম পন্থা হবে।
দলিলের নকল তোলার নিয়ম সম্পর্কে
আমরা বর্তমানে অনেকেই নাম দিয়ে জমির দলিল বের করার চেষ্টা করি। তবে
জমির দলিল বের করতে হলে অবশ্যই জমির প্রকৃত মালিকের নামের প্রয়োজন
হয়। তবে সে ক্ষেত্রে জমির মালিকের প্রকৃত নাম দিলেই জমির তল্লাশি সম্ভব
নয়। উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আমরা জেনেছি যে, সাব-রেজিস্ট্রি
অফিসে বললাম বই তে সূচিপত্র থাকে। এজন্য জমির নকল তোলার জন্য
নাম, খতিয়ান, দাগ নম্বর ইত্যাদির প্রয়োজন হয়।
জমির দলিলের নকল তুলতে হলে প্রথমে আপনাকে নিকটস্থ সাব রেজিস্ট্রি অফিসে যেতে
হবে। সেখানে আবেদন ফরম তুলতে হবে এবং সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। মালিকের
নাম, দলিল নাম্বার, নিবন্ধন এর তারিখ ও মজার নাম ইত্যাদি পূরণ করতে
হবে। এরপর আপনাকে নির্ধারিত ফ্রি দিতে হবে। তাহলে আপনার আবেদনটি
প্রক্রিয়াধীন হবে।
আবেদন গ্রহণের পর অফিসার দলিল খুঁজে বের করে যাচাই-বাছাই করবে। সবকিছু
ঠিক থাকলে এর মধ্যে দলিলের নকলকপি তৈরি করা হবে এরপর আবেদনকারীকে প্রদান
করবে। তবে এখন অনলাইন এর মাধ্যমে কিছু এলাকায় আরো সুযোগ বেড়ে গেছে
যারা ঘরে বসেই ই পর্চা ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে জমির নকল সংগ্রহ করতে
পারবে।
পুরনো জমির দলিলের নকল তোলার পদ্ধতি
পুরনো জমির দলিলের নকল তোলার পদ্ধতি ও এই খতিয়ান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে
পুরো লেখাটি পড়ুন। প্রথমে আপনাকে যেটি জানতে হবে সেটি হচ্ছে কিভাবে
পুরাতন দলিল অনুসন্ধান করতে হয়।
বালাম বই এর সাথে আপনার জমির দলিলের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এজন্য আপনি আপনার
জমি রেজিস্ট্রেশন করার সময় যে বালামের নাম্বারটি দিয়েছিল সেখান থেকে
আপনি আইনজীবী বা দলের লেখকের মাধ্যমে নকল তুলতে পারবেন।
পুরনো জমির দলিলের নকল তোলার পদ্ধতি এজন্য আপনাকে প্রথমে আপনার পুরনো জমির
দলিলে নকল তুলতে হবে এটি তোলার জন্য সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে আবেদন করতে
হবে। এরপর যেসব দলিল ৩০ থেকে ৫০ বছর বা তারও বেশি পুরনো হয়েছে সেগুলো
রেকর্ড সাধারণত জেলার গ্রামের সংরক্ষিত থাকে। এবং সেটি অনুসন্ধান করতে
হবে। অনুসন্ধানের পর দলিলটি পাওয়া গেলে আপনি তার সত্যায়িত নকল
কপি প্রস্তুত করবেন। তাহলে আবেদনকারী নির্দিষ্ট সময়ে এসে সংগ্রহ করতে
পারবে
এছাড়াও জেলা রেকর্ড রুম বা মাহফিজ খানায় অনুসন্ধান করতে
পারেন। যদি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল না পাওয়া যায় তবে মাহফিজ খানায়
যোগাযোগ করতে পারেন। সেখানে পুরনো দলিল সংরক্ষিত থাকে এবং নির্দিষ্ট
রেজিস্টার বই থেকে যাচাই করা হয়। আশা করি পুরনো জমির দলিল নকল তোলার পদ্ধতি
সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
দলিলের নকল তুলতে কত খরচ হবে
দলিলের নকল তুলতে তেমন খরচ পড়ে না। তবে দলিলে নকল তোলার জন্য বা নকল
সংগ্রহের জন্য নির্দিষ্ট কিছু ফি প্রদান করতে হয় এবং এটি ধাপে ধাপে নিয়ে
থাকে। তল্লাশি পরিদর্শনের জন্য আপনাকে প্রথমে আবেদন করতে হবে। এবং
এটির জন্য বছর প্রতি ২০ টাকা করে নিয়ে থাকে। এবং অতিরিক্ত বছর প্রতি
১৫ টাকা নির্ধারিত হয়ে থাকে। তারপরে রেজিস্টার বহি পরিদর্শনের জন্য
তারা পৃষ্ঠা প্রতি ১০ টাকা নিয়ে থাকে। এছাড়াও দলিলের নকল
প্রস্তুতের জন্য জন্য টাকা নিয়ে থাকে।
বাংলা ভাষায় দলিলের নকল প্রস্তুত এর জন্য যদি ১০০ শব্দের হয় তাহলে
১০ টাকা নিবে। এবং ইংরেজি শব্দের জন্য যদি ১০০ শব্দ হয় তাহলে
১৫ টাকা নিয়ে থাকে। তবে আপনি যদি জরুরী ভিত্তিতে নকল তুলতে চান
তাহলে সেক্ষেত্রে ৫০ টাকা দিতে হবে। তবে যদি নকলের দৈর্ঘ্য ৪ পৃষ্ঠার
বেশি হয় তাহলে উক্ত অতিরিক্ত পৃষ্ঠার জন্য ১৫ টাকা নিয়ে
থাকে। নকল নবিজদের এখানে কিছু টাকা দিতে হয়।
নকল নোবিসদের পারিশ্রমিক হিসেবে যদি ইংরেজি নকল সংগ্রহ করেন পৃষ্ঠা প্রতি
৩৬ টাকা ধার্য করা হয়ে থাকে। এবং বাংলা নকল সংগ্রহের জন্য পৃষ্ঠাতে
২৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। এখানে আপনাকে পোর্টফি এর জন্য আরও
২০ টাকা দিতে হবে আবেদনপত্রে। এছাড়াও দলিলের জন্য ৫০ টাকার নন
জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প দিতে হবে। সাধারণত সঠিকভাবে ৫০০ থেকে
৭০০ টাকা খরচ হতে পারে। তবে আপনার এলাকার জমির ওপর নির্ভর করে
২০০০ টাকা থেকে ৪০০০ টাকার মধ্যে জমির নকল তুলতে পারবেন।
দলিল তল্লাশি অনলাইনে কি করা যায়
দলিল তল্লাশি অনলাইনে কি করা যায় এ বিষয়ে উপর ভিত্তি করে আপনাদেরকে বলতে
চাই। বাংলাদেশ অনলাইনে দলিল তল্লাশির এখনো পুরোপুরি কোন ব্যবস্থা চালু
হয়নি। কিন্তু জমির মালিকানা খতিয়ান সংক্রান্ত তথ্য আপনি অনলাইন থেকে
খোঁজ নিতে পারবেন। জাতীয় এ পর্যায়ে ওয়েবসাইট কিংবা স্থানীয় জেলা
প্রশাসনের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে জমির খতিয়ান দাগ নাম্বার ইত্যাদি
অনুসন্ধান করতে পারবেন।
অনলাইনের মাধ্যমে আপনি যদি দলিল তল্লাশি করতে চান তাহলে আপনাকে প্রথমে কি পর্চা
ওয়েবসাইটের ভিতর প্রবেশ করতে হবে। এরপরে আপনি
বিভাগ, জেলা, থানা, ইউনিয়ন এবং মৌজা নির্দিষ্ট স্থানে সকল
তথ্য দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। তাহলে জমির মালিকানা কিংবা রেকর্ড
সংক্রান্ত তথ্য দেখতে পারবেন। তবে একটি সমস্যা রয়েছে দলিলের নকল কিংবা
সার্টিফাইড কপি সরাসরি অনলাইন থেকে পাওয়া যায় না এর জন্য আপনাকে, সাব
রেজিস্টার অফিসে গিয়ে আবেদন করতে হবে।
নিকটস্থ সাব রেজিস্টার অফিসে আপনি যখন নির্দিষ্ট ফি দিয়ে আবেদন
করবেন। তখন জমির মালিকানা এবং রেকর্ড সংক্রান্ত সকল তথ্য দেখতে
পাবেন। অনেক ক্ষেত্রে বিস্তারিত তথ্যের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাল
ভূমি সেবা গুলো ব্যবহার করা যায়। তবে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে ভূমি সংক্রান্ত
তথ্যগুলো ডিজিটালাইজ হচ্ছে। তবে বর্তমানে একমাত্র উপায় হচ্ছে নিকটস্থ সাব
রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে আবেদন করতে হবে।
অনলাইনে দলিল চেক করা যাবে কি
জমির দলিল সহজে বের করুন এই টপিক নিয়ে আপনাদের সামনে অনেকক্ষণ কথা বলেছি।
কিন্তু অনলাইনে কি দলিল চেক করা যাবে? এ বিষয়ে বলতে গেলে প্রথমে আপনাকে
বলতে পারি বর্তমানে বাংলাদেশে অনলাইনের মাধ্যমে সরাসরি দলিলের নকল কিংবা
দলিল সংক্রান্ত তথ্য পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থা এখনো চালু হয়নি। সেক্ষেত্রে
জাতীয় ই পর্চা ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে ভূমি সংক্রান্ত তথ্যগুলো সংগ্রহ করতে
পারবেন। তবে নিকটস্থ সাব রেজিস্ট্রি অফিস থেকে নির্ধারিত ফি দিয়ে দলিলের
সম্পূর্ণ বিবরণ সংগ্রহ করতে পারবেন।
ই পর্চা (https://eporcha.gov.bd) এই ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট জেলা, থানা বা
উপজেলা, ইউনিয়ন, মৌজা ইত্যাদি সঠিকভাবে তথ্য দিলে জমির
মালিকানা সম্পর্কিত কিছু তথ্য পাওয়া সম্ভব।
তবে জমির মালিক যদি দলিলের নকল সত্যতা যাচাই করতে চাই তাহলে নিকটস্থ সাব
রেজিস্টার অফিসে গিয়ে আবেদন করতে হবে। আবেদন করার পর নির্ধারিত ফি জমা
দিবেন তাহলে জমি সংক্রান্ত সকল তথ্য পেয়ে যাবেন। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে
জেলা প্রশাসনে নিজস্ব ওয়েবসাইটে জমির তথ্য দেওয়া থাকে।
কিছু ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন তার নিজস্ব ওয়েব সাইটে জমির তথ্যগুলো আপলোড দিয়ে
থাকে এবং তা পুরোপুরি নির্ভরযোগ্য কিনা এটির জন্য ভূমি অফিসে যেতে
হবে। তবে সবচাইতে ভালো খবর হচ্ছে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে ভূমি সংক্রান্ত
বিষয়গুলো অনলাইনের ডিজিটালাইজ করছে। জমির কিছু কিছু তথ্য অনলাইনে পাওয়া
গেলেও। জমের সম্পূর্ণ বিবরণ ও কপি সংগ্রহ করার জন্য রেজিস্ট্রি অফিসে
গিয়ে আবেদন করা একমাত্র উপায়।
আগে জমি বিক্রি হয়েছিল কিনা যাচাইয়ের পদ্ধতি
জমি কেনার আগে প্রথমে যেটি ক্রেতাকে লক্ষ্য রাখতে হবে জমিটি কি পর্যায়ে আছে বা
আগে কিনা হয়েছিল কিনা। এবং জমির মালিক যাচাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ রয়েছে
যাতে কোন আইনই জটিলতায় না পড়ে।
এর জন্য আপনাকে বেশ কয়েকটি পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। খতিয়ান ও দাগ
নাম্বার সংগ্রহ করে দেখতে হবে। জমির পর্চা ও খতিয়ান যা যা করে আপনি বুঝতে
পারবেন জমির মালিকানা পরিবর্তন হয়েছিল কিনা।
এবং জমির পর্যালোচনা করাও জরুরি হয়েছে জমির দলিল এর (সেল ডিড) দেখে আপনি
বুঝতে পারবেন জমি আগে কার নামে ছিল এবং বর্তমানে এর মালিক কে রয়েছে। আপনি
দলিল যাচাই এর জন্য রেজিস্ট্রি অফিসে দলিলের সত্যতা যাচাই করতে
পারবেন। যদি এর আগে জমিটি কোথাও বিক্রি হয়ে থাকে এবং বর্তমানে এ জমির
মালিক কে রয়েছে এর একটি রেকর্ড থাকবে। এছাড়াও নামজারি ও খাজনা পরিষদের
কাগজ দেখে বুঝতে পারবেন।
জমির মালিক যাচাইয়ের জন্য খাজনা পরিষদের যে কাগজ রয়েছে সেটি চেক করতে হবে যদি
জমিটি এর আগে বিক্রি হয়ে থাকে সেটির নাম জারি মিউটেশন নতুন মালিকের নামে
হয়েছে কিনা সে সম্পর্কে, ভূমি অফিস বা জেলা প্রশাসকের ভূমি শাখা থেকে দেখা
যেতে পারে। এছাড়াও আইনজীবী সহায়তার মাধ্যমে ভূমি সংক্রান্ত সকল তথ্য
জানতে পারবেন। এসব পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করলে আপনি সহজে জানতে পারবেন আগে
জমি বিক্রি হয়েছিল কিনা এবং বৈধভাবে মালিকানা পেয়েছে কিনা।
খতিয়ান কাকে বলে ও এর গুরুত্ব বিস্তারিত জানুন
জমির দলিল সহজে বের করুন এবং দলিল তল্লাশির ক্ষেত্রে খতিয়ান বেশ গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা রাখে। খতিয়ান হলো জমির মালিকানা, দখল ও পরিমাণ ইত্যাদি
সম্পর্কিত সরকারের নথি এটি তৈরি করা হয় জমির রেকর্ড ও জরিপ বিভাগের
মাধ্যমে।
এটি মূলত ভূমির মালিক কে জমির পরিমাণ কত এবং সেটি মূলত সেটি কি ধরনের জমি এ
সমস্ত তথ্য গুলো সংরক্ষণ থাকে
খতিয়ান হচ্ছে ভূমি ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি জমির
মালিকানা ধার্যের সহায়তা রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। জমি কেনা বেচা,
উত্তরাধিকারের সূত্রের মালিকানা, জমির বিভিন্ন সংক্রান্ত মামলা বা বিরোধ
সমাধান করতে খতিয়ান ব্যাপক ভূমিকা রাখে। কিন্তু মালিকানার ক্ষেত্রে
চূড়ান্ত নয় এটি নামজারি সনদ যাচাই করতে হয়। আপনি যদি জমির খতিয়ান
সঠিকভাবে যাচাই বাছাই না করেন তাহলে জমি কেনা বেচার সময় জমি সংক্রান্ত
সমস্যায় পড়তে পারেন।
পুরনো দলিল তল্লাশি করবেন কিভাবে
আপনি কি জমির মালিক? কিন্তু কাগজপত্র হাতে নেই এ নিয়ে ভাবছেন তবে আর
ভাবনা নয়। আপনি নিকটস্থ সাব রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে আপনি ভূমি সংক্রান্ত
সমস্যায় পড়ে থাকলে কিংবা পুরনো দলীল খুজে না পেলে আবেদন
করুন। আবেদনের ক্ষেত্রে কিছু ফি প্রযোজ্য হবে। সেটি পে করলে আপনি
সহজেই নির্ধারিত কিছু সময় এর মধ্যেই পুরনো দলিল পেয়ে যাবেন।
জমির প্রকৃত মালিকানা এবং জমির পূর্ববর্তী যদি কোন লেনদেন থাকে তাহলে পুরনো
দলিল তল্লাশি গুরুত্বপূর্ণ। এটি মূলত ভূমি অফিসে গিয়ে নির্দিষ্ট কিছু
ফিয়ের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। প্রথম সাবজেক্ট এর অফিসে গিয়ে জমির
দলিল নাম্বার এবং অন্যান্য যে রেকর্ড গুলো রয়েছে সেগুলো প্রদান করতে
হবে। দলিল নাম্বার এবং যদি সাল জানা থাকে তাহলে অফিস থেকে দলিলের নকল
সংগ্রহ করা যায়।
এরপর আপনাকে খতিয়ান ও পর্চা যাচাই করতে হবে। মৌজা দাগ নাম্বার, ও
খতিয়ান নাম্বার দিয়ে সাব রেজিস্ট্রি অফিসে গেলে রেকর্ড পরীক্ষা করা হবে এতে
জমির মালিকানা ও যদি মালিক পরিবর্তন হয়ে থাকে সে সমস্ত তথ্য গুলো জানা
যায়। এছাড়াও আপনি মিউটেশন রেকর্ড চেক করতে পারেন এটিরও বেশ ভূমিকা
রয়েছে। ইউনিয়ন ও ভূমি অফিসে গিয়ে দেখা যাবে যে এর আগে জমির মালিক কে
ছিল বা মালিক পরিবর্তন হয়েছে কিনা
শেষ কথাঃ জমির দলিল সহজে বের করুন
জমির দলিল সহজে বের করুন এবং ই পর্চা খতিয়ান অনুসন্ধান সম্পর্কে আপনাদের সামনে
অনেক তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আপনি উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে জানতে
পারবেন খতিয়ান কাকে বলে খতিয়ানের গুরুত্ব কি। জমি বিক্রয় এর আগে হয়েছিল
কিনা, এছাড়াও অনলাইনে কিভাবে জমি চেক করা যায় এবং অনলাইনের মাধ্যমে জমির
তল্লাশি করা যায় কিনা এবং আরো অনেক জমি সংক্রান্ত তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি
মাত্র। তবে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হবে জমি সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যায়
পড়লে নিকটস্থ সাব-রেজিস্ট্রি।
নিকটস্থ সাব-রেজিস্ট্রি বা উকিলের সাহায্য নিয়ে সেটি সমাধান
করা। বর্তমানে অনলাইনে জমির দলিল সম্পর্কে অনেক তথ্য ডিজিটালাইজ
হচ্ছে। তবে আপনি সকল ভুমি সংক্রান্ত তথ্য অনলাইনে এর মাধ্যমে পাবেন
না। তবে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে আপনি আবেদন করতে
পারেন। নির্ধারিত ফি এর মাধ্যমে আপনি সকল জমি সংক্রান্ত তথ্য
পাবেন। আপনি যদি দলিলের নকল তুলতে চান তাহলে ৫০০ টাকা মত খরচ হতে
পারে। তবে ২০০০ টাকা মতো নিয়ে থাকে। পুরো আর্টিকেলটি পড়ার
জন্য আপনাকে ধন্যবাদ!
টিপসলার্ন বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url